ঢাকার ধামরাইয়ে যাদবপুর ইউনিয়নের আমরাইল গ্রামের লোকজন মনের অক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন আমরা প্রায় দুই যোগ ধরে শুধু আশা পেয়ে আসছি কিন্তু আজ পর্যন্ত পেলাম না সেতু। শুধু নির্বাচন এলে আশা পাই কিন্ত সেতু পাই না বলেন যাদবপুর ইউনিয়ন বাসি। ধামরাই উপজেলার উত্তর এলাকার শেষের দিকে এই গ্রাম এখানে প্রায় কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস।
অথচ একটি সেতুর অভাবে যোগাযোগকে আলাদা করে দিয়ে, জন জীবনেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে । কারণ নদীর দক্ষিণ পারে বাজার আর ঐ পারে দুর্বিসহ মানুষের বসবাস শুধু অভাব হল একটি সেতু। যার কারণে গ্রামের লোকজন সম্মিলিত ভাবে নিজেদের টাকা দিয়ে এই বংশী নদীর উপর একটি কাঠের সেতু তৈরি করেছেন। এই সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ পারাপার হতে হয়। তাই এই নদীর উপর কাঠের সেতুটি হওয়াতে কিছুটা হলেও মানুষের দূর্ভোগ কমেছে। কারণ সেতু না থাকায় উত্তর পাড়ের গ্রামের লোকজনদেরকে নৌকা বা বাশেঁর সাখু দিয়ে পার হতে হত। যার কারণে আমরাইলসহ একাধিক গ্রামের স্কুল পড়োয়া ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে আসতো না। এতে লেখাপড়ার দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছেন নদীর উত্তর পারের ছাত্র-ছাত্রীরা।
এছাড়া এই নদী উপর কোন সেতু না থাকায় প্রায় ৫কিলোমিটার ঘুরে যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে হয় ঐ গ্রামের লোকজনদের। এছাড়া যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের কয়েক শত ছাত্র-ছাত্রী এই বাশেঁর সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে দেখাগেছে পা পিচলে পড়ে বই খাতা বিজিয়ে বাড়ী যেতো সেআর স্কুলে আসতে চাইতো না। সেই কারণে কয়েকটি গ্রামের লোকজন মিলে প্রায় ৫লক্ষ টাকা ব্যায়ে কাঠের সেতুটি তৈরি করে প্রায় ১০টি গ্রামের লোকজনের চলাচলের দূর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। কারণ এই সেতু দিয়ে সহজে পার হতে পারেন বিষেশ করে স্কুল ও কলেজের ছাত্রীরা। তবে ভারি কোন যান চলাচল করতে পারে না এই সেতু দিয়ে। আমরাইল ও পাঁচলক্ষি গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর উত্তর দক্ষিণ পারে রয়েছে আমরাইল,পাঁচলক্ষি,গবরা,গ্রোমগ্রামসহ প্রায় ১০টি গ্রাম।আর এই ১০টি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার পরিবারের লোকজন এই সেতু দিয়ে চলাচল করে। বংশী নদীর দক্ষিণ পারে রয়েছে যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অনেক পুরুনো বড় একটি গরুর হাট এবং শত বছরের একটি হাটবাজার যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাট বাজার করতে আসে সেই সাথে স্কুলের সকল ছাত্র ছাত্রীদের এই সেতু দিয়ে পারা পার হতে হয়।
এই ব্যাপারে বংশী নদীর উত্তর পাশের আমরাইল গ্রামের বাসিন্দা মোঃ অহেদ আলী বলেন, আমরা জন্মের পর থেকে শুনে আসতেছি যে এই নদীতে সেতু হবে, কিন্তু আজ পর্যন্ত সেতুর কোন কাজ দেখতে পেলাম না। আল্লাহ জানে কবে এখানে সেতু হবে।শুধু নির্বাচন এলে পত্যেকেই শুধু আশা দিয়ে থাকে কিন্তু সেতু পায় না। সেই কারণে আমাদের কষ্টের অর্জিত টাকা দিয়ে সেতুটি তৈরি করেছি। এখন সরকার দিলে ভাল না দিলে আর ভাল। এই ব্যাপারে পাচঁলক্ষি গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ বাচ্চু মিয়া, মোঃ সেলিম হোসেন বলেন,আমরা গ্রাম বাসী এই বংশী নদীর পারা পারের জন্য আগে নৌকা ব্যাবহার করতেন। সেই সময় স্কুলে যাওয়ার সময় অনেকের ছাত্র-ছাত্রীর বই খাতা পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যেত এমন কি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও ঘটতো অহরহ। কিন্তু আজ আর সেই নৌকা নেই কারণ এখন আর কেউ নৌকা বাইতে চায় না। তাই গ্রাম বাসী মিলে সবার কাছ থেকে টাকা তুলে কোন রকমে একটি কাঠের সেতু তৈরি করে আমাদের চলাফেরা করতে হচ্ছে। এতে শুধু কোন রকমের মানুষ পারা পার হয়। কিন্তু কোন যানবাহন যাতাযাত করতে পারে না।যার জন্য আমাদের জন জীবন অনেক পিছিয়ে পড়েছে। স্কুলের ছেলে মেয়েরা এখন কাঠের সেতু দিয়ে পার হয়ে অনেকটাই স্বস্তিবোধ করেন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা।
বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের দাবি এই বংশী নদীর উপর একটি ব্রিজ । এই ব্যাপারে যাদবপুর বিএম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী স্যারের সাথে তিনি বলেন, আমরাইল পাচঁলক্ষি বংশী নদীর উপর কাঠের সেতু হওয়ার কারণে আমার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। কারণ যখন বাশেঁর সাঁকো ছিল তখন ছেলে মেয়ের অনেক ঝুঁকি নিয়ে পারা পার হতো, বিশেষ করে মেয়েরা বাশেঁর সাঁকো দিয়ে পার হতে ভয় পেয়ে স্কুলে আসে নাই। আবার অনেকেই বাশেঁর সাঁকোর ভয়ে অন্য স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বেশি কষ্ট হয় বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে। এই সময় সেতু দিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে নিচে পরে অনেকেই আহত হওয়ার ঘটনা ও ঘটেছে অনেক বার। তাই গ্রামের সকলের সহযোগিতাই কাঠের সেতুটি হওয়ার কারণে স্কুলে অনেক ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা রেড়ে গেছে। আর সরকার যদি ঐখানে একটি ব্রিজ করে দেয় তাহলে ঐ এলাকার লোকজন সহজে তাদের ভারি যানমাল নিয়ে পারাপার হতে পারবে।
এই ব্যাপারে যাদবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আয়ুইব আলী ইছাক সানরাইজ বাংলা কে বলেন নিজেও কাঠের সেতুর জন্য এলাকার লোকজনকে সহযোগিতা করেছি। এছাড়া এ ব্যাপারে এলাকার জনগন আমাকে অবগত করেছে আমি নিজে ও এই সেতুর ব্যাপারে কথা বলেছি অতি তাড়াতাড়ি সেতুটি করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আজিজুল হক বলেন,আমি সেতুটির ব্যাপারে উর্ধতন কৃর্তিপক্ষের নিকট প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে করে অতি তাড়া তাড়ি সেতুটি নির্মাণ করা হয় সেই ব্যাপারে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।