ঢাকার ধামরাই উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নে নওগাঁও বাজারে গাজীখালী নদীর ভাঙনে ৫টি দোকান ঘর নদীতে ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ৫টি দোকান মালিক ব্যবসার মালামাল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।তাদের এখন পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেয়। এছাড়া বাজারের দোকানসহ নওগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশ্ররাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বাজারের শতাধিক দোকান ঘর হুমকির মুখে রয়েছে বলে বিষয়টি সুতিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম রাজা নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল সোমবার দিনগত রাতে নওগাঁও বাজারের ৫টি দোকান ঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই সাথে বাজারের আরও প্রায় এক শত দোকানসহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে ভাঙার হুমকির মুখে রয়েছে।এছাড়া নদীর পারে শত বছরের একটি বটগাছ রয়েছে যে কোন সময় নদীতে ভেঙে পড়ে যেতে পারে । ৫টি দোকান নদীতে বিলীন হওয়ার কারণে দোকান মালিকগণ নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। এতে করে আশে পাশের এলাকা গুলিতে হাহাকার দেখা দিয়েছে। এই দিকে ধামরাই উপজেলার প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ না থাকায় এলাকাবাসি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সরেজমিনে গিয়ে নওগাঁও বাজারের দোকান মালিক সুত্রে জানাযায়,গাজীখালী নদীর উপর ব্রিজের কাজ চলছে।এতে নদীর দক্ষিণ পাশে কয়েকটি ইটভাটার গাড়ী ও লোকজন চলাফেরা করার জন্য ইটভাটার মালিকগণ ও ব্রিজ নির্মণের ঠিকাদারের যোগসাজসে নদীর মধ্যে একটি বাঁধ নির্মাণ করেন।
সেখানে ছোট একটি কালভাট দিয়ে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু কালভাট দিয়ে ওজানের পানি দ্রত বের হতে না পারায় নদীতে অতিরিক্ত স্রোত হওয়ার কারণে নওগাঁও বাজারের দোকান ঘর বিলীন হয়ে গেছে বলে দাবি করেন বাজারের দোকান মালিকগণসহ নওগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। এতে স্কুল, মসজিদ ও ছাত্র-ছাত্রীদের খেলার মাঠ গাজীখালী নদীর ভাঙনের ফলে হুমকির মধ্যে রয়েছে। নদীর মধ্যে বাঁধ কেটে দেওয়া ও ভাঙন ঠেকাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় নওগাঁও বাজারের দোকান মালিক ও এলাকাবাসি। তবে নদী ভাঙনের কবল থেকে বাচতে বাজারের লোকজন বাঁশ দিয়ে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই বিষয়ে দোকান মালিক মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন, আমি গত কাল সারাদিন দোকান করে সন্ধ্যার পর দোকন বন্ধ করে বাড়ী যায় আজ সকালে দোকানে এসে দেখি আমার দোকানের মালামালসহ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমার যা কিছু ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। আমি এখন কি করবো। ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দোকানের ভিতরে অনুমানিক প্রায় ৫লক্ষ টাকার মাল ছিল। এই বিষয়ে দোকান মালিক মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি গরীব মানুষ।বয়লার মোরগীর দোকান করে কোন রকমে দিন চলে। আমি গতকাল ১৫০টি বয়লার মোরগী রেখে দোকান বন্ধ করে বাড়ী যায়। আজ সকালে এসে দেখি আমার দোকান নদীতে চলে গেছে আমি একটি মোরগীও রক্ষা করতে পারি নাই। রাইচ মিল মালিক মোঃ বাবুল হোসেন বলেন, আমার রাইচ মিলের অর্ধেকের বেশি ভেঙে মেশিনসহ বিলীন হয়ে গেছে। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এই বিষয়ে নওগাঁও বাজার কমিটির সভাপতি মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, ইটভাটার মালিকরা নদীর মধ্যে বাঁধ দেওয়ার কারণে পানির শ্রোত বেশি হওয়ায় আজ বাজার ও স্কুল মসজিদ হুমকির মধ্যে পড়েছে। এই বিষয়ে সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখে ইটভাটার মালিকদের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি। এছাড়া আমার যদি কোন সহযোগিতা লাগে তাহলে আমি করবো। এই বিষয়ে নওগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম রসুল বলেন, আমি বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। এই বিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেন,আমি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের সাথে কথা বলে নদী ভাঙনরোধের দ্রত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।