করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্কুল-কলেজ খোলার প্রথম দিনে ঢাকার ধামরাইয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা মুখের আড়ালে দেখা গেছে মিলনমেলার আনন্দ। দীর্ঘদিন পর শিক্ষাঙ্গনে আসার আনন্দে মেতেছিলেন সবাই।ক্লাসের চেয়ে প্রথম দিনে সবার মধ্যে ভাব বিনময়ই বেশি হয়েছে। রোববার (১২সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ধামরাই সরকারি কলেজসহ স্থানীয় কয়েকটি কলেজে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য।সেখানে কথা হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।ধামরাই সরকারি কলেজের ফটকে ঢুকতেই দেখা যায় কিছুটা দুরত্ব বজায় রেখে আড্ডা দিচ্ছিলেন শরিফুল ইসলাম রিফাত, রুবেল হোসেন পল্লব,মনি আক্তারসহ কয়েকজন।উচ্চ-মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার পর এই প্রথম কলেজে এসেছেন তারা।জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থীরা বলেন,বাসায় বসে বসে জীবন যেন থেমে গিয়েছিলো। বাড়ির লোকজন পড়ার চাপ দেয়।পড়তে চাই।কিন্তু পড়ায় মন বসে না। শুরু হল অনলাইন ক্লাশ। মোবাইল হাতে নিলে বলে,মোবাইলই শেষ করল।এখন ক্লাস তো মোবাইলে।বলেই হেসে একখান সবাই।সবাই খুশি এত দিন পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে। সকালে ধামরাই বাজারের পাশেই দেখা মিলল এক বাবা-মেয়ের।কলেজের পোশাকে মেয়েকে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন সোমভাগ এলাকার সামাদ হোসেন।অটো রিকশা করে সকাল সকাল রওনা দিয়েছেন তারা। রিকশা থামিয়ে কথা হল তাদের সঙ্গে।জানতে চাইলে সামাদ হোসেন বলেন,করোনার পর থেকেই মেয়ে ১১টার আগে ঘুম থেকে ওঠে না।তবে আজ দ্রত উঠে রেডি।ঝটপট বেরিয়ে পড়েছি তাই। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে নেয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা।ক্লাশে গোলাকার চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে।দেয়ালে ঝুলছে নানা সতর্কতামূলক প্রচারপত্র।যেমন ‘নো হাই ফাইভ, অনলি হাই’, মাস্ক পরুন’সহ আরও নানা কিছু।বসানো হয়েছে বেসিন। এই বিষয়ে সূয়াপুর নান্নার স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন,স্কুল খোলার উপলক্ষে স্কুলের গেটের সামনে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী যেমন মাস্ক,হান্ডস্যানিটাইজার নিশ্চিত করে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে ক্লাশের কার্যক্রম শুরু করি। স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। সরকারী সকল নির্দেশনা মেনে পাঠদান শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে ধামরাই সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ সেলিম মিয়া বলেন,গত ৮-১০ দিন ধরেই শিক্ষার্থী-শিক্ষক সবাই অপেক্ষা করে ছিল কলেজ খোলার।উচ্চ মাধ্যমিকের যেসব শিক্ষার্থী প্রথম কলেজে আসলেন তারা আজকেই প্রথম ক্লাস করেছে। অনেকের মধ্যে আবেগ-উচ্ছাসপূর্ণ চেহারা দেখেছি। যেন এক মিলনমেলায় রুপ নিয়েছে পুরো শিক্ষাঙ্গন।’তিনি আরও বলেন, ‘কলেজ খোলার আগেই সরকারী নির্দেশনা মেনে আমরা পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করেছি।এছাড়া সামজিক দুরত্বের বিষয়টিও মাস্ক ব্যবহার যথাযথভাবে দেখা হয়েছে। সবমিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার মধ্যেই ব্যাপক আনন্দ দেখেছি আমরা।