ধানকোড়া গিরীশ ইনস্টিটিউশনের এসএসসি- ৯৩ ব্যাচের বন্ধুদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৪ মে) সকালে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ২৯ বছর পর অত্র স্কুলের ৯৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়। অনুষ্ঠানে শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলয়াত ,গীতা পাঠ এবং জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।বেজে উঠে আমরা ৯৩ ব্যাচ গানের সুর …
এরপর সৃজনশীল নানান আয়োজন শেষে মধ্যাহ্ন বিরতি দেওয়া হয়। বিরতির মধ্যে একসাথে বসে খাওয়া দাওয়া করা হয়। বিরতি শেষে বিভিন্ন খেলাধুলা, নাচ-গানের মাধ্যমে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পুরো আয়োজনে আনে ভিন্ন মাত্রা। সব শেষে ছিল র্যাফেল ড্র। অনুষ্ঠানে প্রায় ১০০ বন্ধু উপস্থিত ছিলেন বলে আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় পুরষ্কার ২০২০ প্রাপ্ত এস এস সি ৯৩ ব্যাচের বন্ধু ডাক্তার মোঃলুৎফর রহমান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে লটারির ড্র এর পুরুষ্কার বিজয়ীদের হাতে তুলে দেয়।
দীর্ঘদিন যোগাযোগ না থাকায় অনুষ্ঠানে এসে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। খোঁজখবর নেন পুরনো বন্ধু এবং তাদের পরিবার-পরিজনের। অনেকেই এ সময় স্কুলজীবনের স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন। অনেকে বহুদিন পর প্রিয় বন্ধুকে পুনরায় কাছে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরেন। এভাবে অনুষ্ঠানস্থল এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।
আমরা এস,এস,সি ৯৩ এর আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম বিশ্বাস লিটন বলেন, ‘বন্ধুত্বের টানে, বন্ধুর পানে আমরা ৯৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ ২৯ বছর পর একত্রিত হয়েছি। এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।আয়োজকদের অন্যতম আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমাদের এই মিলন মেলা ঈদের আনন্দ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। যারা আজ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন সবাইকে শুভেচ্ছা এবং ঈদ মোবারক। এক সময় আমরা একসঙ্গে পড়াশোনা করলেও, জীবিকার তাগিদে অনেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি। কেউ ঢাকা, কেউ চট্টগ্রাম, কেউবা আবার বিদেশে অবস্থান করছে ,জীবনের এমনই নিয়ম। এখন হয়তো কালেভদ্রে সেসব বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়। ফলে আমরা চেয়েছিলাম এবারের ঈদের ছুটিতে সবাই একত্রিত হতে। সবাইকে পেয়ে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা হলো।
মিলন মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা জাফর ইকবাল বলেন, ‘কৈশোরের বন্ধুত্ব কখনও হারায় না। কর্মব্যস্ততায় আমরা হয়তো ছেলেবেলার কথা ভুলে থাকি, কিন্তু ছেলেবেলা কখনও মুছে ফেলা যায় না। এ কারণে জীবন চলার পথে যতো মানুষের সঙ্গেই বন্ধুত্ব হোক না কেন, ছেলেবেলার বন্ধুত্বের মতো কখনও স্মৃতিযোগ্য নয়। জীবনে একজন হলেও প্রকৃত বন্ধুর প্রয়োজন। আর স্কুল লাইফের ফ্রেন্ডই হতে পারে সেই প্রকৃত বন্ধু। এ কারণেই আমরা সবাই মিলে চেয়েছিলাম এমন একটা আয়োজন করতে যেখানে সবাই একসঙ্গে বহুদিন পর একত্রিত হতে পারবো। এমন সফল একটি আয়োজন আমার ছেলেবেলা, আমার স্কুলজীবনকে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমরা আরো বড় পরিসরে বন্ধুদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাই। আজকে সেই স্বপ্নের পথে আমাদের চলা শুরু হলো।’
অনুষ্ঠানে দায়িত্বরত বন্ধু আব্দুল মজিদ ,সঞ্চালনায় বুলবুল জানায় আমরা এস,এস,সি ৯৩ ভবিষ্যতে সামাজিক কার্যক্রমেও অংশ নেবে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বন্ধুদের সহায়তা, অসচ্ছল বন্ধুদের মেধাবী সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়া, বন্ধুদের যে কোনো বিপদে পাশে থাকাসহ দেশের যে কোনো দুর্যোগে মানবিক কর্মকাণ্ডে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করবো।
অন্যতম বন্ধু মিঠু বলেন, আমাদের শিক্ষকদের পাশে ও দাঁড়ানো উচিৎ তারা আমাদের কে জ্ঞান দান করেছে বলে আমরা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পেশায় আজ আমরা কর্মরত । সবাই সবাইকে ধন্যবাদ এবং দোয়া চেয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করেন আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম বিশ্বাস লিটন।