মানিকগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষের উপর ফিল্মী স্টাইলে হামলা করে মারপিট, নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়াসহ ভিকটিমদের আশ্রয়দাতার বাড়ী ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মকিমপুর গ্রামে। মামলা ও অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ, গত ২৯ আগষ্ট সোমবার সকাল আনুমানিক ৭.৩০-৮.৩০ ঘটিকার মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মকিমপুর গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও উজ্জল মাহমুদের উপর চড়াও হয়ে তাদের স্বত্বভোগদখলীয় জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বাঁশের লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর হামলা করে মারপিট করে।
এসময় উজ্জল মাহমুদ তার সহোদর ভাই জাহাঙ্গীরকে হামলাকারীদের কবল থেকে উদ্ধার ও বাঁচাইতে গেলে একই গ্রামের সাহাজুদ্দিন, সাহাজুদ্দিনের পুত্র সেলিম ও মোতালেব এবং রহমানের পুত্র মালেক মিলে তাদের হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকেও প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারীভাবে বাইরাইয়া নিলাফুলা জখম করে।
এসময় মোতালেব মিয়া একই গ্রামের বাদশা মিয়া, রুনু মিয়া এবং ইউনুস আলীর সহযোগিতায় উজ্জলের পাঞ্জাবীর বুক পকেটে থাকা পিকআপ গাড়ীর মাসিক ২টি কিস্তি প্রদানের জন্য রক্ষিত নগদ ৬৬,০০০/-(ছেষট্টি হাজার) টাকা এবং তার বাম হাতে থাকা সিকো ফাইভ ঘড়ি যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৮০০ রিয়াল, বাংলাদেশী টাকায় আনুমানিক ২৭,০০০/-(সাতাইশ হাজার) টাকা জোরপূর্বক ছিনাইয়া নেয়।
জাহাঙ্গীর ও তার সহোদর ভাই উজ্জল আসামীদের কবল থেকে প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে দৌঁড়াইয়া প্রতিবেশী চায়না বেগমের বসতবাড়ীতে উঠে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা ফিল্মী স্টাইলে একযোগে তাদের হাতে থাকা লোহার রড, দা, বাঁশের লাঠি, বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে পিছু পিছু ধাওয়া করে আমার বসত বাড়ীতে অবৈধভাবে জোরপূর্বক অনধিকার প্রবেশ করে পুনরায় তাদের উপর হামলা চালায়।
এ সময়ে মোঃ সেলিম তার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে জাহাঙ্গীরকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মারিলে উক্ত বারি বাম হাত দিয়া ফিরাইলে বাম হাতের কব্জি ও কনুইয়ের মধ্যবর্তী স্থানে বারিটি লাগিয়া মারাত্মক নীলা ফোলা জখমপ্রাপ্ত হয়।
মোতালেব তার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে উজ্জলের মাথা লক্ষ্য করিয়া বারি মারিলে উক্ত বারি তিনি বাম হাত দিয়া ফিরাইলে বাম হাতের কব্জি ও কনুইয়ের মধ্যবর্তী স্থানে বারিটি লাগিয়া মারাত্মক নিলাফোলা জখম হয়।
অতঃপর জাহাঙ্গীর ও উজ্জল প্রাণ রক্ষার্থে চায়নার বসত ঘরে আশ্রয় নিলে সকল আসামীগণ আক্রোশের বশ:বর্তী হয়ে চায়না বেগমের বসতঘরের কাঠের দরজা, টিনের বেড়া সহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
এদিকে স্থানীয় সমেজ আলীর স্ত্রী চায়না বেগম জানান, হামলাকারীরা আমার বাড়ীতে জোরপূর্বক অনাধিকার প্রবেশ করিয়া ভাংচুর করার কারনে পরিবারের সদস্যসহ আমি তাদের দ্বারা মানুষিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হইয়াছি। এই ভাংচুরের ঘটনায় আমার পরিবারের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আনুমানিক ১,৫০,০০০/-(এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা।
হামলাকারীদের দ্বারা হামলার শিকার হওয়া জাহাঙ্গীর আলম ও উজ্জল মাহমুদকে আমার বসত বাড়ীতে আশ্রয় দেয়ার কারনে নাটের গুরু সেলিম ও মোতালেব আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ উপস্থিত সকলের সম্মখে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের খুন করে লাশ গুম করার হুমকি প্রদান করে।
অত:পর কতক সাক্ষীসহ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষীগণের ডাকচিৎকারে আশে পাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায় এবং চলিয়া যাওয়া কালে হুমকি দেয় যে, ভবিষ্যতে সুযোগ পাইলে আমাদেরকে খুন করিয়া ফেলবে।
আমি পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আইনী প্রতিকার পেতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এদিকে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া জাহাঙ্গীর আলম জানান, চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে ৩০আগষ্ট তারিখে মানিকগঞ্জ সদর থানায় এ বিষয়ে মামলা করিতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহন না করিয়া বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি আমি বিজ্ঞ আদালতে ন্যায় বিচার পাব।