ঢাকার ধামরাইয়ে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ে করে প্রথম স্ত্রীকে নির্যাতন করে যোর করে ডিভোর্স দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইতালি প্রবাসী ইয়াজ উদ্দিন (৩২) ও তার বাবা আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে।
এঘটনায় ভুক্তভোগী স্ত্রীর বাবা গতকাল ধামরাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। গত শনিবার (২৭আগষ্ট) সকালের দিকে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের নওগাঁ এলাকার আইয়ুব আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ তার শ্বশুরসহ অন্যরা তার কোন অনুমতি না নিয়েই তার স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করায়। তার প্রতিবাদ করায় শ্বশুর আইয়ুব আলী তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে নির্যাতন করেন। অভিযুক্ত স্বামী ইতালি প্রবাসী উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের নওগাঁ এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে প্রবাসী ইয়াজ উদ্দিন (৩২) এবং ভুক্তভোগী স্ত্রী একই এলাকার আবুল কালামের মেয়ে অঞ্জনা আক্তার (২৮)।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০/১২ বছর পূর্বে অঞ্জনা আক্তার ও ইয়াজ উদ্দিনের বিয়ে হয়৷ বিয়ের তিন মাস পার না হতেই ইয়াজ উদ্দিন অর্থ উপার্জনের জন্য ইতালি চলে যায়। প্রায় পাঁচ বছর পর ছুটিতে এসে কয়েকদিন বাড়িতে থেকে আবার চলে যায়। এর মধ্যে স্ত্রীর কোন খোঁজ খবর রাখেন না ইয়াজ উদ্দিন। স্ত্রীর কোন খরচও দেন না। ভুক্তভোগী গার্মেন্টসে চাকরি করে নিজের খরচ নিজেই চালান। এর মধ্যে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার জানতে পারে যে গত তিন মাস আগে ইতালী থেকে গোপনে বাড়ী এসে ইয়াজ উদ্দিন আরেকটি বিয়ে করেছেন। বিয়ে করে সেই নতুন স্ত্রীর সাথে প্রায় তিন মাস সংসার করে আবার ইতালি ফেরত গেছেন।এখন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের দিয়ে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে চাপ দেয়াচ্ছে ডিভোর্স দেয়ার জন্য। ভুক্তভোগীর বাবা আবুল কালাম জানান, আমার মেয়ের বিয়ের পর থেকেই সে আমার বাড়িতে। মেয়ের জামাই ইতালি থাকে। আমার মেয়ের কোন খোঁজ খবর নিত না। কোন খরচ দিতো না। গত কয়েক মাস পূর্বে ইতালি থেকে এসে ইয়াজ উদ্দিন আরেকটি বিয়ে করেছে শুনেছি। এখন আমার মেয়েকে নিয়ে সে আর সংসার করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে আমার মেয়েক।
আমি এর বিচার চাই। ১০/১২ বছর ধরে আমার মেয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে। এখন সে আরেকটা বিয়ে করে সংসার করবে আমার মেয়ের কি হবে এখন। ভুক্তভোগী অঞ্জনা আক্তার জানান, আমাদের বিয়ের ১০/১২ বছরের মধ্যে আমার স্বামী বাড়িতে ছিলো মাত্র কয়েক মাস। স্বামী বিদেশ থাকলেও আমার কোন খোঁজ খবর নিতো না। আমার খরচ দিতো না। আমার এত বছর ধরে বিয়ে হলেও স্বামীর সুখ কি তা বুঝিনি। স্বামীর জন্য অপেক্ষায় আছি যে বিদেশ থেকে যখন দেশে ফিরে আসবে তখন হয়ত সব ঠিক হইয়ে যাবে। কিন্তু কয়েক দিন আগে আমার স্বামী আমাকে ফোন দিয়ে বলতেছে সে নাকি দেশে এসে বিয়ে করে তিন মাস ছিলো। বিয়ের ছবিও দিছে আমাকে। তিনি আরো বলেন, এখন আমাকে সে ডিভোর্স দিয়েছে। সে আমাকে নিয়ে আর সংসার করবে না বলছে। আমার কোন দোষ না দেখিয়ে সে আমাকে এভাবে ডিভোর্স কেন দিবে। আমি এত বছর ধরে অপেক্ষায় আছি তার সাথে সংসার করবো বলেই। আমি আমার স্বামীর অধিকার চাই। অভিযুক্ত ইয়াজ উদ্দিনের বাবা আইয়ুব আলী জানান, আমার ছেলে দেশে আসছিল বলে শুনেছি সে আমাদের কাউকে জানায়নি। আমাদের সাথে কথাও বলেনি। বিদেশ চলে গেছে তার পর জানতে পারছি যে আসছিলো।
আর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি সত্যি না। এবিষয়ে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বদিউজ্জামাল বলেন, এবিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন মেয়ের বাবা। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তরিত জানানো যাবে।