ঢাকার ধামরাইয়ে ৭ দিনের নবজাতক শিশুকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবীর ঘটনায় জড়িত ২ জন অপহরনকারীকে যশোরের অভয়নগর এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সাথে নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কুলে ফিরিয়ে দিলেন র্যাব।
গতকাল (৩মার্চ) দিনগত রাতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল যশোর জেলার অভয়নগর থানাধীন আমতলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারী দম্পতি মোঃ রুবেল শেখ (৩৫) খুলনা জেলার দিঘলীয়া এলাকার মৃত মজিদ শেখের ছেলে,তানিয়াকে গ্রেফতার করেন। সেই সাথে ৭ দিনের নবজাতক শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা বর্ণিত অপহরণের ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। ভুক্তভোগী মিলি আক্তার কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।ঢুলিভিটা বাজারের পাশে থাকার কারণে একই এলাকার ভাড়াটিয়া রুবেল ও তার স্ত্রীর সাথে তার পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে সু-সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গ্রেফতারকৃত রুবেল মিলি আক্তারকে ফুফু বলে ডাকত। তিনি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। গ্রেফতারকৃত রুবেল জীবিকার তাগিদে রাজধানী ঢাকায় আসে গামেন্টর্সকর্মী পাশাপাশি রাজমিস্ত্রীর কাজ করত। রুবেলের স্ত্রী তানিয়া আফরোজ একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার।
গত ০৩ বছর পূর্বে রুবেল তানিয়াকে বিবাহ করে ধামরাই ঢুলিভিটা এলাকায় বসবাস করতে থাকে। উল্লেখ্যঃ-গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে রাত ০৮ টার সময় ঢাকা জেলার ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকায় মিলি আক্তার নামের এক নারীর বাসায় পরিচিত রুবেল ও তার স্ত্রী দেখা করতে আসলে তাদের নিকট তার ৭ দিনের নবজাতক ছেলেকে রেখে ঔষধ ক্রয়ের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়। ২০ মিনিট পর ফিরে এসে মিলি আক্তার তার বাসায় নবজাতক শিশুসহ রুবেলকে না পেয়ে সারা রাত পার্শবর্তী বিভিন্ন স্থানে তাদের সন্ধান করে।
পরদিন ঢুলিভিটা বাজার কমিটির কাছ থেকে রুবেল এর বাসার ঠিকানা নিয়ে বাসায় গেলে বাসা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায় এবং একই সাথে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পায়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ রুবেল মোবাইল ফোন চালু করে নবজাতক শিশুকে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। ১ মার্চ রুবেল অন্য একটি নাম্বার দিয়ে ভুক্তভোগী মিলি আক্তারকে ফোন করে জানায় নবজাতক ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং মুক্তিপণের টাকা না দিলে নবজাতককে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী মিলি আক্তার তার নবজাতক শিশুকে ফিরে পেতে র্যাব-৪ এর সহায়তা চেয়ে উক্ত বিষয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা যায়।